ভূমিকা
ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক নবী মুহাম্মদের অনেকগুলো স্ত্রী এবং দাসীর মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সী স্ত্রী ছিলেন তারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং সহচর, তার প্রায় সমবয়সী হযরত আবু বকরের শিশুকন্যা হযরত আয়িশা। মাত্র ৬ বছর বয়সী এই স্ত্রীকে যখন নবী বিয়ে করেন, তখন নবী পঞ্চাশোর্ধ বয়স্ক মানুষ। ইসলামের প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসূত্র থেকেই জানা যায়, নবীর এই শিশু স্ত্রী আয়িশা সম্পর্কে একটি পরকীয়া প্রেমের অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনাটি এতটাই মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল যে, আয়িশাকে তালাক দেয়ার মত পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়েছিল। নবীর দল দুইভাগে বিভক্ত হয়ে প্রায় যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল।
নবীর ধর্ম প্রচারের কাজে অন্যতম সাহায্যকারী এবং অর্থ দানকারী ছিলেন আবু বকর। সত্যিকার অর্থেই আবু বকর ছিলেন নবীর সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ সাহাবীদের মধ্যে প্রধান, অভিজ্ঞ এবং ধনী ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, তিনি নবী মুহাম্মদের বাল্য বন্ধুও বটে। তার কন্যাকে তালাক দেয়া সেই সময়ের জন্য হতো একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর আয়াত নামিয়ে নবী মুহাম্মদের বিষয়টির ফয়সালা করতে হয়, এবং কানাঘুষার বিষয়টি কঠোরভাবে দমন করতে হয়। আমাদের আজকের আলোচনা সেই বিষয়টি নিয়েই। আশাকরি পাঠকগণ লেখাটা মন দিয়ে পড়বেন এবং তথ্যসূত্রগুলো যাচাই করে দেখবেন।
পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লিতে আমাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল: তসলিমা নাসরিন
একই সাথে, নির্মোহ নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রতিটি খুঁটিনাটি সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করবেন। উল্লেখ্য, আমাদের লক্ষ্য এটি নয় যে, আয়িশা আসলেই পরকীয়া প্রেম করেছিলেন নাকি করেন নি, সেটি বিচার করা। তিনি পরকীয়া প্রেম করে থাকলেও তাতে একজন নারীর মর্যাদা বিন্দুমাত্র কমে যায় না। একজন অল্পবয়সী বালিকা যদি কোন মানুষের প্রেমে পড়ে, তাতে অপরাধের কিছু নেই। তাই যেসকল মুক্তমনা এই লেখাটি পড়বেন, তারা যেন ভবিষ্যতে আমাদের লেখার তথ্যউপাত্ত ব্যবহার করে আয়িশার চরিত্রে কালিমা লেপনের চেষ্টা না করেন, সেই বিষয়ে সতর্ক করছি। আয়িশা পরকীয়া করলেও কিছু যায় আসে না, না করলেও কিছু যায় আসে না। এখানে শুধুমাত্র ঘটনাটির নির্মোহ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
আয়িশার বয়স এবং দাম্পত্য জীবন
পূর্বেই একটি লেখাতে আমরা প্রমাণ করেছি, নবী মুহাম্মদের শিশু স্ত্রী আয়িশার সাথে তার বিয়ে আয়িশার ইচ্ছে বা পছন্দ অনুসারে হয় নি। বিবাহ বা যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে আয়িশা আসলে জানতেনই না যে, তার সাথে কী হচ্ছে। সেই অল্প বয়সে ভালবাসা, প্রেম বা বিয়ের মত বিষয় তিনি বুঝতে পেরেছেন বলেও প্রমাণ মেলে না। বিস্তারিত জানার জন্য এই লেখাটি পড়তে পারেন, এই লেখাটিতে [1] সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আয়িশা যে সেই সময়ে বিবাহ এবং যৌন সম্পর্কের পুরো বিষয়টি বুঝতেই পারেন নি, সেটি সম্পর্কিত একটি সহি হাদিস উল্লেখ করা হচ্ছে। [2] [3]