মানুষের চোখের একটা নির্দিষ্ট কারুকাজ আছে, সেই চোখ যত ছোট কিংবা বড়, কাজল কালো কিংবা শুভ্র সাদা হোক না কেনো সেই চোখের গভীরে একটু লক্ষ্য করলেই সেই মানুষটা সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারনা করা যায় আর সেইজন্যই হয়তো কবিরা বলেছেন ‘চোখ যে মনের কথা বলে’। এই চোখ দিয়েই নারীরা রাস্তাঘাটে, ঘরে বাইরে প্রতিনিয়ত ধর্ষন হচ্ছে আবার কেউ কেউ এই চোখের মায়াজালেই মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, স্নেহ এসকল আবেগের বহিপ্রকাশ যুগে যুগে সেই আদিকাল থেকেই ঘটিয়ে আসছে। একটি মানুষকে চেনার সবচাইতে সহজ ও কার্যকারী উপায় হচ্ছে এই চোখ।
আগে আমি কারও চোখের দিকে গভীরভাবে তাকাতে ইতস্তত বোধ করতাম সেই নির্দিষ্ট মানুষটির কুৎসিত রুপটি দেখে ফেলার ভয়ে কিন্তু আজ জীবনের এইক্ষনে এসে নিজের নিরাপত্তার খাতিরে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হবার ভয়ে এই চোখের গভীরে যেয়ে আশেপাশের মানুষগুলো কে বোঝার চেষ্টা করি এবং আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে সেখান থেকে কিছুটা হলেও মানুষগুলো সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়! সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আমার ধারনা বেশীর ভাগ বাঙ্গালীর চোখের মধ্যেই সর্বক্ষন অস্হিরতা বিদ্যমান থাকে যেখানে থাকে সর্বদা ধরা পরে যাবার ভয়!
আমাদের ধর্মে চোখ সংযত করার এবং সেই চোখযুগল সর্বক্ষন নিচু রাখার কঠিন নির্দেষ আছে যার অন্যতম কারন হলো সুন্দরী রমনী কিংবা শিশুকে দেখে আপনার যৌন উত্তেজনাকে সংবরন করা কিন্তু কার্যত ধার্মিকরা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে তেমন উপকারিতা পাচ্ছেন না কেননা একটি সুন্দর জিনিসকে আপনি যখন সুন্দর হিসেবেই মন ভরে দেখবেন তখন এই দেখা থেকেই আপনার মধ্যে সেই সুন্দরের সাথে একটা আত্মিক সুসম্পর্ক তৈরী হয় যা মানবতাকে প্রশস্ত করে আর অপরদিকে ক্রমাগত ঈমান হারানোর ভয়ে আপনি যখন কোনও সুন্দর জিনিস দেখা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবেন তখন সেই জিনিসটি কে ঘিরে আপনার ভেতরে এক কৌতুহল জাগবে এবং তারই রেষ থেকে তৈরী হবে এক অদম্য ক্ষুধা যা খুবই ভয়ংকর! এইজন্যই ধার্মিকরা অনায়াসেই নারীকে খাবারের সাথে তুলনা করে তাকে আপাদমস্তক ঢেকে রাখার কঠিন নির্দেষ দেন যাতে করে কামার্ত মানুষগুলো নারী দেখেই তার উপর ঝাপিয়ে না পরে।
ধর্ম মাতালেরা বলে বেড়াচ্ছে লতা মঙ্গেশকর নাকি জাহান্নামে যাবেন, ভারতীয় গান নাকি মুসলমানদের জন্য হারাম
কিন্তু এই শিক্ষায় তারা নারীকে একটা সুস্বাদু খাবারের ন্যায় দেখে বিধায় যখন তখন ক্ষুধার্ত কামবাসনায় তাদের উপর যখন তখন ঝাপিয়ে পরতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করে না এবং আল্লাহ যেহেতু পাহাড় সমান গুনাহ করলেও তার কাছে মাফ চাইলে তিনি অনায়াসেই মাফ করে দেন তাই ধার্মিকেরা সেই আশাতেই পাপের বোঝা পাহাড় সমান করাতে কোনওরকম অনুতপ্ততার স্বীকার হন না এবং যখন তখন কুকীর্তি করে শুধুমাত্র সেই না দেখা আল্লার কাছে চোখের পানি আর নাকের পানি মিলেমিশে একাকার করে মাফি পাওয়ার সুবর্ন সুযোগ যখন তখন কাজে লাগান। এতে করে তাদের মানবতার বিকাশ অন্যান্য সেকুলার মানুষের মতো সম্ভবপর হয়ে ওঠে না!
তাই বলি চোরের মতো চোখ লুকিয়ে না রেখে নিজের চোখের সাথে অন্তরের সংযোগ ঘটান এবং এই চোখের গভীরতা দিয়েই মানুষ চিনুন।
Source: Facebook Lopa Rahman