Saturday, April 20, 2024
HomeLifestyleব্রেইনকে শাণিত রাখতে এই অভ্যাসগুলো জরুরি

ব্রেইনকে শাণিত রাখতে এই অভ্যাসগুলো জরুরি

বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের মস্তিষ্কের ওজন গড়ে প্রায় ১.৩৬ কেজি, যাতে প্রায় ১০০ বিলিয়ন স্নায়ুকোষ বা নিউরন রয়েছে। আর এই মস্তিষ্কের ক্ষমতা শুনলে রীতিমতো অবাক হতে হয়। স্নায়ু বিজ্ঞানী ডক্টর ওয়াল্টারের মতে, যদি মানুষের মস্তিষ্কের সমমানের একটি বৈদ্যুতিক ব্রেইন তৈরি করা হয় তাহলে তার খরচের টাকা দিয়ে বর্তমান সময়ে অত্যাধুনিক দশহাজার কোটি কম্পিউটার কেনা সম্ভব। আর এই যান্ত্রিক মস্তিষ্কের আয়তন হবে ১৮টি ১০০তলা বিল্ডিং এর সমান, যা চালাতে এক হাজার কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ এর প্রয়োজন হবে।

ব্রেইনকে শাণিত রাখতে এই অভ্যাসগুলো জরুরি

লাইফস্টাইল ডেস্ক

 

৩ মিনিটে পড়ুন

তবে পরিতাপের বিষয় হলো, সাধারণ মানুষ তার জীবদ্দশায় এত ক্ষমতাসম্পন্ন মস্তিষ্কের মাত্র ২-৩ শতাংশ ব্যবহার করে থাকে, বাকী অংশ অব্যবহৃত হয়ে পড়ে থাকে। আর বিজ্ঞানী বুদ্ধিজীবী শ্রেণির মানুষ ব্যবহার করে ১১ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ। মস্তিষ্কের শুধুমাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহার করে জীবনে সব ধরনের কাজই আমাদের পক্ষে করা সম্ভব। তাহলে বুঝা যায় যে, মস্তিষ্কের বাকি ৯০ শতাংশ ব্যবহার করলে আমরা আরও কতকিছু্ই না করতে পারি। বেশির ভাগ সময়ই এই ক্ষমতাসম্পন্ন মস্তিষ্ক অবহেলিত থেকে যায়। অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে আমাদের মস্তিষ্কের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, মস্তিষ্ককে শাণিত করার প্রাকৃতিক ও সহজ ৮টি স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কথা এখানে আলোচনা করা হলো-

 

# সক্রিয় থাকা ও নিয়মিত ব্যায়াম করা: দ্রুত হাঁটা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, অ্যারোবিক ব্যায়াম স্মৃতিশক্তিকে চাঙা রাখবে। বয়স বাড়তে থাকলেও মস্তিষ্কের জটিল কোনো সমস্যা দেখা দেয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে এতে। তবে, মাঝবয়স থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শরীরচর্চার তালিকা নির্ধারণ করে নিতে হবে।

 

# মস্তিষ্কেরও ব্যায়াম আছে: অঙ্ক বা গণিত চর্চা, ধাঁধার সমাধান বের করা, প্রোগ্রামিং, পাজল গেইম বা দাবা খেলার মতো যে কাজগুলোতে মাথা খাটাতে হয়, সে ধরনের কাজ বেছে নিয়ে তা নিয়মিত করা। কারণ, স্নায়ুকোষের মধ্যে নতুন নতুন সংযোগ তৈরি হয় এ ধরনের চর্চার মাধ্যমে। আর তা মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ম রাখে।

 

আরও পড়ুন: বয়স ৫০ পেরিয়েছে, সুস্থ থাকতে খান এসব খাবার

 

# স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস বা ডায়েট অনুসরণ করা: চিনি কিংবা সম্পৃক্ত চর্বিসমৃদ্ধ খাবার, ফাস্ট ফুড, ভাজাপোড়া, জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব পরিহার করা। পর্যাপ্ত পানি পান করা। সাধারণভাবে, প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পান করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ফরমালিন মুক্ত নানা রঙের টাটকা ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়ার অভ্যাস করা। এতে মস্তিষ্কের পাশাপাশি শরীরটাও ভালো থাকবে। ক্যান্সার, ডায়াবেটিস বা হার্টের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।

 

# দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপমুক্ত থাকার অভ্যাস করা: অনেক চাপের মধ্যেও নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চর্চাটা আমাদের মস্তিষ্ককে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেবে। নিয়ম করে মাঝে-মধ্যে একটু প্রকৃতির সান্নিধ্যে যাওয়া উচিত। শহরে থাকলে সময় বের করে একটু দূরে কোনো গ্রাম থেকে ঘুরে আসা উচিত।

 

# পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো উচিত: বয়সভেদে ঘুমের সময়ের পার্থক্য থাকলেও একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। সুনিদ্রা মস্তিষ্ককে আরও সক্রিয় করে তোলে। সম্প্রতি এক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, জেগে থাকা নয়, বরং ঘুমিয়ে থাকার সময়টাতেই মানুষের মস্তিষ্ক অধিক সক্রিয় থাকে। সারাদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম কিংবা মানসিক চাপের পর মস্তিষ্কে যেসব বিষাক্ত ক্ষতিকর পদার্থ জমা হয়, তা পরিষ্কার করে ঘুমে। পর্যাপ্ত বিশ্রামে মস্তিষ্কের কোষগুলো পরিশোধিত হয়। সতেজতা ফিরে আসে। নতুন কাজ করার উদ্দীপনা তৈরি হয়। চিন্তা করার সময় জড়তা থাকে না। স্বতঃস্ফূর্ত ও সাবলীলভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়। স্বল্প বা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্মতর হয়।

 

# অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জাতীয় খাবার আমাদের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে যেন না ভুলি: যেমন- গাঢ় রঙের আঙুর, ডালিম, রসুন ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। তাই প্রথমেই জেনে নিতে হবে কোন খাবারগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এরপর ডায়েট চার্টে সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করা।

 

আরও পড়ুন: যে অভ্যাস পরিবর্তনে আমরা টাকা জমাতে পারি

 

# প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা: বার্ধক্যজনিত কারণে শরীরের অভ্যন্তরীণ যে ক্ষয় শুরু হয়, তা প্রতিরোধে অন্যতম ভূমিকা পালন করে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। সারাজীবন মস্তিষ্কের ভারসাম্য রক্ষা ও মাথা খাটানোর কাজগুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করে বিশেষ এ পুষ্টি উপাদানটি। তাই আমাদের উচিত ওমেগা-৩ অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবারগুলো খুঁজে বের করা ও তা প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা। যেমন- তেলাপিয়া, টোনা, চিংড়ি, সালমন মাছ, সয়াবিন তেল, ক্যানোলা তেল, ডিম, দুধ, কুমড়ো বিচি ইত্যাদি।

 

  1. # সামাজিক জীবনে সক্রিয় থাকা মস্তিষ্কের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পথ্য: কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে মেলামেশার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা সে কাজগুলোর মধ্যে পড়ে। অন্যদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা, আলোচনা করা মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে এবং চিন্তার শক্তিকে তীক্ষ্ম করে।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

ব্রেইনকে শাণিত রাখতে এই অভ্যাসগুলো জরুরি



Hero

Welcome to the future of building with WordPress. The elegant description could be the support for your call to action or just an attention-catching anchor. Whatever your plan is, our theme makes it simple to combine, rearrange and customize elements as you desire.

Translate »