- ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিপুন বিশ্বাস ৩১ জানুয়ারি সোমবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে উপস্থিত হতে পারেনি বলে সে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারল না। ছেলেটির বাবা পেশায় একজন নাপিত। খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান নিপুন বিশ্বাস।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিপুন বলেন, ‘৩০ জানুয়ারি বিকালে ওয়েবসাইটে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। আমার কোনো স্মার্টফোন নেই, ফলে আমি ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখতে পারিনি। কিন্তু আমার মোবাইল নম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কোনো কল বা মেসেজ দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা দেওয়া হয়নি। মাঝ রাতে আমার একজন বড়ভাই আমাকে ফোন করে ভর্তির বিষয় জানালে আমি তৎক্ষণাৎ আশেপাশের লোকজন ও নিকট আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করে ২৩ হাজার টাকা জোগাড় করি।’
অর্থাৎ তথ্য সরবরাহে কর্তৃপক্ষ যথাযথ বিধি অনুসরণ করলে ছেলেটি এই জটিলতায় হয়ত পড়তো না। তাছাড়া ছেলেটি বন্ধুর মাধ্যমে সকাল ১০ টার দিকে সে ডিনকে তার সমস্যার বিষয়ে জানিয়েছে এবং পথে আছে। তারপরেও সে ভর্তি হতে পারলো না। তার স্থলে যে ভর্তি হলো সে কে? এর পেছনে কোন খেলা আছে কিনা! আমরা কবে থেকে এত law abiding জাতি হয়ে গেলাম? সে যদি কোন এমপি মন্ত্রীর ছেলে হতো তাহলে কি এমন হতো? প্রশ্ন জাগে মনে।
ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের কাছে আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমি কাজ করে হলেও এই টাকা জোগাড় করতে পারবো, কিন্তু আমার বাবা মাকে কী জবাব দেবো? আমার বাসা দূরে হওয়ার জন্য আজ আমি সময়মতো আসতে পারি নাই। যদি সময়সীমা বাড়ানো হতো, তাহলে সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারতাম। তাছাড়াও আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো মেসেজও দেওয়া হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওয়েটিং লিস্টে থাকায় আমি মেসেজ পেয়েছি। এতে আমার দোষ বা ভুল নেই।’
পুরো ঘটনা জানার পর থেকে বুকের মধ্যে চির চির করে ব্যথা করছে।
লিখেছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন
ছবি- রাইজিং বিডি।