শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে ভোগান্তি নিরসনে সর্বোচ্চ অটোমেশন পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, এমপিওভুক্তি হতে স্কুল থেকে শুরু করে শিক্ষা অধিদপ্তর পর্যন্ত ধাপে ধাপে ফাইল নিষ্পত্তিতে যেন বিলম্ব না হয়, বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফাইল সম্পন্ন করেন, সে বিষয়ে তাদের বাধ্য করা হবে। এতে বিভিন্ন সমস্যাও চিহ্নিত হবে। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা যদি কালক্ষেপণ করেন, তাকে জবাবদিহি করতে হবে। মোটকথা একজন শিক্ষক এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে পদে পদে যেন ভোগান্তির শিকার না হন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘অটোমেশন করার কথা ভাবছি। এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া আরও সহজ কীভাবে করা যায়, সেটি নিয়ে আমরা কাজ করব।’
বেসরকারি শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়ার পর তাদের এমপিও পেতে ঘাটে ঘাটে টাকা দিতে হয়। প্রান্তিক পর্যায়ের একজন শিক্ষককে তার স্কুল থেকে শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত ৫ থেকে ৬টি ধাপে এমপিওর আবেদন পৌঁছাতে হয়। এ জন্য শিক্ষকদের ন্যূনতম ১০ হাজার থেকে ক্ষেত্রবিশেষে লাখ টাকাও দিতে হয়। শুধু টাকাই নয়, সময়ও লেগে যায় তিন মাস থেকে ১৩ মাস পর্যন্ত। আরও বেশি সময় লাগে ফাইল চালাচালিতে। এ কাগজ নাই, অমুক কাগজের ফটোকপি অস্পষ্ট। এভাবে সত্যায়িত করলে হবে না- এমন নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হতে হয় একজন এমপিও প্রত্যাশী শিক্ষককে।
বিসিএসের জন্য সিরিয়াসলি না পড়েই বিসিএসে প্রথম হয়েছেন উর্মিতা!
শিক্ষকদের অভিযোগ, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের সারা দেশের এমপিও ৯টি আঞ্চলিক অফিসে বিকেন্দ্রীকরণ করার পর শিক্ষক হয়রানি, ঘুষ লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে কয়েক গুণ।
শিক্ষকদের মতে, এক জায়গার (শিক্ষা ভবনের প্রধান কার্যালয়) দুর্নীতি এখন ৯ জায়গায় পাঠানো হয়েছে। মাউশির দুর্নীতি এখন স্কুল, উপজেলা, জেলা, আঞ্চলিক অফিস, মাউশি অধিদপ্তর পর্যন্ত পৌঁছেছে। এমপিও পেতে এখন পাঁচ ঘাটে একই কাগজ বারবার যাচাই-বাছাইয়ের নামে শিক্ষকদের হয়রানির শিকার হতে হয়। টাকা ব্যয় না করলে তাদের সমস্যার সমাধান হয় না। বাধ্য হয়েই এমপিও প্রাপ্তির আশায় টাকা-পয়সা খরচ করেই শিক্ষকদের অধিদপ্তরে ফাইল পৌঁছাতে হয়। এভাবে ঘাটে ঘাটে লেনদেন হওয়ার প্রমাণ মিলেছে ২০১৭ সালের মাউশির একটি তদন্ত কমিটির কাছে। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও রংপুর অঞ্চলাধীন জেলার কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিওভুক্তির অভিযোগ তদন্ত করেছিলেন তারা।
গত সেপ্টেম্বরেও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় উঠে এসেছে, বর্তমানে চারটি স্থানে ‘হাদিয়া বা সম্মানী’ দিয়ে এমপিওভুক্ত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষ আবেদনকারী শিক্ষকের সঙ্গে চুক্তি করেন। এ ছাড়া প্রাপ্যতা না থাকা সত্ত্বেও নিয়মবহির্ভূত টাকার বিনিময়ে এমপিওভুক্তির অভিযোগ রয়েছে। এমপিওভুক্তিতে পাঁচ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয়।
রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হলেন বিবি রাসেল, তারিক আনাম
মাউশি অধিদপ্তরের আঞ্চলিক কার্যালয়, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ টাকা দিতে হয়।