আচ্ছা, মাদ্রাসাতে কোন মেয়ে যদি জিন্স টিশার্ট পরে পড়তে যায় তাকে কি মাদ্রাসা ঢুকতে দিবে? যদি না দেয় তখন আপনি কি বলবেন? বলবেন কোন আক্কেলে মাদ্রাসায় এই ধরণের পোশাক পরে গেছে? কারণ মাদ্রাসার ড্রেসকোড হচ্ছে চোখমুখ মাথা ঢেকে রাখা। এখন যদি কেউ সেখানে গিয়ে জিন্স টি-শার্টের দাবী তোলে কেউ কি তার পক্ষে বলবেন, জিন্স টি-শার্ট পরা মেয়েদের অধিকার? প্রিয়াংকা গান্ধি বলেছেন, কে হিজাব পরবে, কে বিকিনি পরবে সেটা তার চয়েজ। তাহলে মাদ্রাসায় কেন টি-শার্ট শর্ট স্কাট পরে পড়তে যাওয়া যাবে না?
ভারতের কোন রাজ্যেই মুসলিম নারীদের হিজাব বোরখা পরা নিষিদ্ধ করেনি।
কিন্তু কুরাজনীতিতে সব ঢেকে গেছে। কুলিবারাল সব ঢেকে দিয়েছে। বলা হয়েছে স্কুল কলেজে ড্রেসকোডের বাইরে কেউ অতিরিক্ত পোশাক হিসেবে হিজাব বোরখা পরতে পারবে না। কেউ কি পুলিশে চাকরি করে দাবী করতে পারেন তিনি পুলিশের পোশাক পরবেন না? সবচেয়ে বড় কথা শ্রেণী কক্ষে সম্প্রদায় ধনী গরীব নির্বিশেষে সকলকে একই মর্যাদায় আনার জন্যই ইউনিফর্ম পরানো হয়। শুধুমাত্র মুসলিমদের কাছ থেকে এগুলোর বিরোধীতা ছাড়া আর কোন ধর্ম সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আসে না। স্কুল কলেজের বাইরে আপনি হিজাব পরেন বোরখা পরেন কে মানা করছে? যে মেয়েটি বোরখা পরে কর্নাটকে ‘আল্লাহ আকবর’ বলে ভাইরাল হয়েছে তার এই ছবিগুলিতে তার মুখ খোলা, তার চুল প্রদর্শিত- তাকে দেখে কি হিন্দু মুসলমান বলে আলাদা করা যাচ্ছে? তাহলে শুধুমাত্র কলেজে নিজেকে বোরখা পরিয়ে মুসলিম আইডেন্টি প্রতিষ্ঠা করতে কেন গেলো? পুরো বিষয়টিতে আছে ছক কষা হিসেব। প্রিয়াংকা গান্ধি দুম করে বলে দিলেন, হিজাব পরা মুসলিম মেয়েদের চয়েজ এখানে কেউ জোরখাটাতে পারবে না। অথচ কোথাও এরকম কোন নির্দেশনা কি দেয়া হয়েছে? হয়নি। ভারতে কি স্বাদে বাম-কংগ্রেসের ভোট কমে হিন্দুত্ববাদীদের ভোট বেড়েছে?
ফেইসবুকের কবি, মানবতাবাদী, ভামাতি, সেমি জামাতি সকলেই বোরখা পরা এই মেয়েটির প্রতিবাদকে বলছেন জুলুমের বিরুদ্ধে মজলুমের প্রতিবাদ! স্কুল ড্রেস মানব না, আইন মানব না, এর নাম মজলুম? খুবই আজব মডারেট মুমিন আপনি। ইরানে কোন নারী বিদেশমন্ত্রী সফরে গেলেও তাকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে হলে হিজাব মাথায় দিয়ে বসতে হয়। ভারতের সুষমা স্বরাজ থেকে জর্মানির চ্যান্সেলর সকলেই মাথায় রুমাল বেধে বসতে হয়েছিলো।
কোথায় গেলো তখন নারীর পোশাকের স্বাধীনতা? ফেইসবুকের কোন কবি, মানবতাবাদী কি ইরানী সৌদিদের এই রকম বাধ্যতামূলক ড্রেসকোডের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন? কিছুদিন আগে বাংলাদেশের মৌলবীবাজারে একটি মেয়ে জিন্স পরায়, বিদেশে পরতে যাওয়ায় যখন মসজিদ কমিটি সেই পরিবারটিকে একঘরে করে রেখেছিলো তখন মজলুম দরদীদের কোন এক্টিভিটি কিন্তু দেখা যায়নি! যেমনটি কখনোই দেখা যায় না ইরানী হিজাব বিরোধী আন্দোলনের সময়। তিন তালাক বিলের পক্ষেও এরা স্বাগত জানায়নি। যখনই ফ্রান্সের স্কুলে বোরখা পরে বিতর্ক শুরু করে কোন মুসলিম মেয়ে তখনই এরা ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা তোলে। মালালা কানাডাতে হিজাব পরে চাকরিতে গেলে চাকরি হারালে কানাডার বিরুদ্ধে বিদ্বেষের অভিযোগ না তুলে এখন ভারতের স্কুল কলেজে হিজাব নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে সওয়াল করছেন। মুসলিমদের তো ভারতে বিকল্প ব্যবস্থা আছেই। তারা বলছে লেখাপড়ার চাইতেও তাদের কাছে পর্দা সবার আগে। তাহলে তারা মাদ্রাসাতে কেন পড়তে যায় না? সেখানকার ড্রেসকোড তো বোরখা!…