ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া জ্যোতি সাহা স্বপ্ন ছিল বড় কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার। করোনাকালে জ্যোতির সেই স্বপ্ন আরও খানিকটা দূরে চলে গেছে। তাই তিনি নেমে পড়লেন ফুচকার বাটি হাতে! জ্যোতি সাহার ভাইও একজন ইঞ্জিনিয়ার। করোনাকালে তার আয় অর্ধেকে নেমে আসায় পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। তাই ভাই-বোন মিলে ফুচকার দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নেন।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভাই-বোনের এই কাহিনী। তাদের জীবনের গল্প ভীষণভাবে প্রভাবিত করেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার খড়দহের।বাবা শ্রীদাম সাহার একটা পরিত্যক্ত মুদির দোকানে উত্তরচব্বিশ পরগনার টিটাগড় এর বিবেক নগরে এখন জমে উঠেছে ফুচকার দোকান। বাংলাদেশি ঝাল ফুচকা খেতে রোজ সন্ধ্যায় ভিড় ভেঙে পড়ে জ্যোতির দোকানে।
৭৩ বছর বয়সে মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট
জ্যোতি সাহা বলেন, টাকার অভাবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় ভাইয়ের মাথায় প্রথম আসে ফুচকার কথা। ভাইয়ের প্রস্তাবে আমিও রাজি হয়ে যাই। তারপর আমরা পদ ঠিক করি। দোকান তো একটা আছেই! ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়া করে ফুচকা বিক্রি করবে! ছেলে-মেয়ের মুখে এমন কথা শোনার পর কার্যত বাজ পড়েছিল সাহা বাড়িতে। মা-বাবা প্রস্তাব নাকচ করে দেন। শুধু নাকচই নয় রীতিমত বকুনি খেতে হয়েছিল ভাইবোনকে। কিন্তু তারা নাছোড়বান্দা।
অন্তঃসত্ত্বা তামিমার ছবি প্রকাশ্যে আনলেন ‘অবৈধ স্বামী’ নাসির
মা রাজি হলেও বাবার মতামত পেতে প্রায় এক সপ্তাহ লেগেছিল বলে জানান জ্যোতি। তারা একপ্রকার বাধ্য হয়েছিলেন ফুচকা বিক্রি করতে। অন্য ব্যবসা করতে গেলে অনেক পুঁজির প্রয়োজন। তাদের বাড়িতে তখন বেশ খারাপ অবস্থা। ফুচকা বিক্রিটাই তাদের কাছে ছিল সবচেয়ে সহজ রাস্তা। জ্যোতি বলেন, আসলে আমার ভাইয়ের সাহায্য ছাড়া এত কিছু কখনোই সম্ভব ছিল না। এমনও হয়েছে একটা মেলায় আমরা স্টল দিয়েছি। সেদিনই আমার পরীক্ষা। ভাই দোকান সামলাচ্ছে আর আমি অনলাইনে বি-টেকের থার্ড সেমিস্টারের পরীক্ষা দিচ্ছি দোকানে বসেই। ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্রীর এই ফুচকার দোকান তরুণ-তরুণীদের খুব পছন্দের। করোনা কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু কিন্তু দিয়েছে অনেক নতুন বন্ধু। তাদের শালপাতায় তেঁতুল জল ঢালতে ঢালতে জ্যোতি ভাবে, জীবন কতনা শিক্ষা দেয়!