বিটকয়েনের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সিকে সরকারি মুদ্রা হিসেবে ব্যবহারকারী একমাত্র দেশ এল সালভাদর। যদিও দেশটির মধ্যেই এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড (আইএমএফ) সতর্ক করার পরও দেশটির সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছিল।
তবে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতায় পুরো প্রকল্প এখন হুমকির মুখে।
ক্রিপ্টোসলেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এল সালভাদরের নাগরিকরা বিটকয়েন লেনদেনের ক্ষেত্রে দেশটির নিজস্ব চিভো ওয়ালেট ব্যবহার করে। সেই চিভো ওয়ালেট নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে।
দেশটির নাগরিকরা অভিযোগ করছে, ওয়ালেট থেকে তাদের বিটকয়েন হারিয়ে যাচ্ছে। যদিও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখনও কিছু বলছে না।
অভিযোগ জানানোর পরও অনেক দিন অপেক্ষা করেও কেউই তার হারানো বিটকয়েন ফেরত পাচ্ছে না।
শুরু থেকেই চিভো ওয়ালেটের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল এর ব্যবহারকারীরা। কয়েকটি অভিযোগে জানা গেছে, ওয়ালেটটিতে কিছু বাগজনিত (অ্যাপ্লিকেশনের অ্যালগরিদম বা প্রোগ্রামে ত্রুটি) সমস্যা রয়েছে। ব্যবহার করার সময় এর ইউজার ইন্টারফেসেও গ্লিচ করে। এ অ্যাপটি ক্র্যাশ করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
দ্রুত পেমেন্টের ক্ষেত্রেও ম্যালফাংশনিং হতো, তবে কর্তৃপক্ষ এ সমস্যার সমাধান করেছে। বাকি সমস্যাগুলো রয়েই গেছে।
ক্রিপ্টোকারেন্সির এক্সচেঞ্জ সাধারণত দুই ধরনের। সেন্ট্রালাইজড ও ডিসেন্ট্রালাইজড। সেন্ট্রালাইজড এক্সচেঞ্জগুলোয় একজন ব্যবহারকারী ক্রিপ্টোকারেন্সি জমা ও ক্রয়-বিক্রয়ও করতে পারে, সে ক্ষেত্রে কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয়েরও সুবিধা থাকতে পারে। ডিসেন্ট্রালাইজড এক্সচেঞ্জে এ ধরনের সুবিধা থাকে না।
ডিসেন্ট্রালাইজ ওয়ালেটের ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত ছোট লেনদেনের সময় বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই সর্বস্তরে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সেন্ট্রালাইজ ওয়ালেটের কোনো বিকল্প নেই। এখন কেন্দ্রীয় সেন্ট্রালাইজড ওয়ালেটে সমস্যা হলে জনগণের অনাস্থা তৈরি হবে। ফলে দেশটিতে সর্বস্তরে বিটকয়েন চালু করার ক্ষেত্রে বড় ধরনের বাধার সৃষ্টি হবে।
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বিটকয়েনকে সরকারি মুদ্রা ঘোষণা করে মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদর।
বিটকয়েনের ১২ বছরের ইতিহাসে এটাই প্রথম কোনো দেশ, যারা তাদের লেনদেনে ক্রিপ্টোকারেন্সি হিসেবে বিটকয়েনকে সরকারি মুদ্রা হিসেবে ঘোষণা করল।
এ ছাড়া ব্যবসা ও সরকারকে কর পরিশোধের ক্ষেত্রে বিটকয়েন ব্যবহার করার জন্য উৎসাহিত করার কথা জানিয়েছিল এল সালভাদরের সরকার।
কয়েন মার্কেট ক্যাপের তথ্যমতে, বিটকয়েনের বর্তমান মূল্য ৪০ লাখ টাকা (৪৭ হাজার ডলার)।