পরিবারের নতুন সদস্য আসছে। এই সংবাদ এলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন বাবা, মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। কিন্ত এক্ষেত্রে পরিবারে নতুন সদস্য আসার সংবাদ পরিবারের কাছে বিড়ম্বনা ও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তাই ‘নির্যাতিতা’ নাবালিকার গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল বাবা-মা। ৩ জানুয়ারি নাবালিকার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে বিশেষজ্ঞ কমিটিকে। তার উপরই সিদ্ধান্ত নেবে হাইকোর্ট। অনুমোদন মিললেই গর্ভপাত হবে নাবালিকার।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, বালি নিশ্চিন্দার বাসিন্দা প্রণয় তালুকদার (পরিবর্তিত) ও তাঁর স্ত্রী চন্দা তালুকদার (নাম পরিবর্তিত) একমাত্র কন্যা সোনাইকে (নাম পরিবর্তিত) নিয়ে বসবাস করতেন। প্রণয়বাবু পেশায় রাজমিস্ত্রি। আর তাঁর স্ত্রী পরিচারিকার কাজ করতেন। দ্ররিদ্র পরিবারে আর্থিক অনটন লেগেইছিল। এরমধ্যেই একদিন তাঁদের নাবালিকা মেয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। তালুকদার পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দা মুন্না ধানুকা তাঁর ১৭ বছরের নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। চলতি বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর হাওড়া বালি নিশ্চিন্দা থানায় তালুকদার পরিবার মুন্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয় পুলিসি তদন্ত। এরপরই উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের অম্বর হোটেল থেকে নাবালিকাকে উদ্ধার করেন পুলিস। ১৬ নভেম্বর হাওড়া আদালতে মুন্না এবং সোনাই দুজনকেই পেশ করা হয়। মুন্নাকে নিম্ন আদালত জেল হেফাজতে পাঠায়। অন্যদিকে নির্যাতিতা নাবালিকাকে হোমে পাঠানো হয়।
আইনজীবী শর্মা আরও জানিয়েছেন যে, বর্তমানে ওই নাবালিকার ২২ সপ্তাহের গর্ভবতী। এখন চলতি বছরের ১২ অক্টোবর গর্ভপাত সংক্রান্ত সংশোধন আইনে বলা আছে যে, আদালতের নির্দেশে ৩ দিনের মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কমিটি রিপোর্ট দেবে। সেই কমিটির অনুমোদন পেলে ৫ দিনের মধ্যেই গর্ভপাত করাতে পারবে পরিবার। তাই আইনজীবীর দাবি, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিচার করুক আদালত। ইতিমধ্যে নাবালিকাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা হাওড়া জেলা হাসপাতালে সুপারকে নির্দেশ দেন যে, অবিলম্বে প্রসূতি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দিয়ে ওই নাবালিকার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে ৩ জানুয়ারির মধ্যে। নাবালিকার গর্ভপাত করা যাবে কিনা তাও রিপোর্টে উল্লেখ রাখতে হবে। সেই রিপোর্ট হাতে আসার পরই আদালত গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নেবে।