ত বছর দেশের ফার্মেসিগুলোতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ। এক বছরে সাড়ে ১৬ শতাংশ হারে বাড়ছে ওষুধের বাজার। ২০১৮ সালে ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে এ বাজারের আকার। এর ৬৮ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করছে শীর্ষ ১০ ওষুধ কোম্পানি। জেনেরিক ওষুধ হিসেবে রেনিটিডিন এর মধ্যে অন্যতম।
তবে সম্প্রতি রেনিটিডিনে ক্যান্সারের উপাদান শনাক্ত হওয়ার পর ওষুধটি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এ বিতর্কের কারণে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প নতুন সংকটে পড়তে পারে বলে মনে করেন এই খাতের সংশ্লিষ্টরা।
এরই মধ্যে ভারতের দুই প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল দিয়ে রেনিটিডিন উৎপাদন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এর নেতিবাচক প্রভাব ওষুধ শিল্পে পড়বে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
দেশে ওষুধ উৎপাদনকারী অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান আছে ২০৪টি। এসব কোম্পানির ওষুধের বিক্রি ও ধরন নিয়ে জরিপ চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত তথ্যপ্রযুক্তি ও ক্লিনিক্যাল গবেষণার বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আইকিউভিআইএ। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে ওষুধের বাজারের আকার দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৫১২ কোটি টাকা। ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এ বাজারের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। আর গত বছর দেশে ওষুধের বাজার বেড়েছে ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
বেসরকারি এক জরিপে প্রকাশ পেয়েছে, দেশে অ্যাসিডিটির ওষুধের বাজার এরই মধ্যে ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দেশের বাজারে ওমিপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল, র্যাবিপ্রাজল,প্যান্টোপ্রাজল, ল্যান্সোপ্রাজল ও রেনিটিডিন জেনেরিকের অ্যাসিডিটির ওষুধ বিক্রি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ওমিপ্রাজল ও ইসোমিপ্রাজল জেনেরিকের ওষুধ। রেনিটিডিন জেনেরিকের অ্যাসিডিটির ওষুধের বিক্রিও কম নয়। খাতসংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, দেশে রেনিটিডিন জেনেরিকের ওষুধের বাজার রয়েছে ২০০-২৫০ কোটি টাকার।
রেনিটিডিনের কাঁচামাল নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সাময়িকভাবে কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে জানান ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এসএম শফিউজ্জামান। তিনি বলেন, নেতিবাচক প্রভাব সত্ত্বেও স্বচ্ছতার স্বার্থে আমরা বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত বাজারে রেনিটিডিন বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটির অপেক্ষায়ও রয়েছি। তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও আমরা তা অনুসরণ করব।
দেশের অধিকাংশ কোম্পানিই রেনিটিডিন জেনেরিকের ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি করে। এর মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালসের রেনিটিডিন-জাতীয় ওষুধ বেশি বিক্রি হয়।
রেনিটিডিন বিতর্কের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে জেনারেল ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মোমেনুল হক বলেন, রেনিটিডিনের কাঁচামাল নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হবে। এতে কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। শুধু রেনিটিডিনের কাঁচামাল নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আমরা এর বিক্রি বন্ধ রাখার পাশাপাশি বাজার থেকে ওষুধটি প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে অনেকের মধ্যেই বাজারে থাকা অ্যাসিডিটির অন্যান্য ওষুধের বিষয়েও নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে।
অ্যাসিডিটির ওষুধ থেকেই দেশের ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোর সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আসে। স্বাভাবিকভাবেই রেনিটিডিন বিতর্কের নেতিবাচক প্রভাব কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় পড়বে।
রেনিটিডিন নিয়ে আলোচনার মধ্যে এ ট্যাবলেট তৈরিতে ভারতের দুটি প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল আমদানি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ। ভারতের সারাকা ল্যাবরেটরিজ ও মেসার্স ডা. রেড্ডির কাঁচামালে বাংলাদেশে তৈরি রেনিটিডিন ট্যাবলেটও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত রোববার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারতের দুই প্রতিষ্ঠান সারাকা ল্যাবরেটরিজ ও ডা. রেড্ডির তৈরি কাঁচামাল (এপিআই) দিয়ে রেনিটিডিন ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রি সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে।
ভারতীয় প্রতিষ্ঠান দুটির কাঁচামাল ব্যবহার করে তৈরি সব ওষুধ কোয়ারেন্টাইন করে রাখতে হবে। সেগুলো বিক্রি ও বিতরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আমদানি করা রেনিটিডিন এইচসিএলে এন-নাইট্রোমেথাইলামাইনের (এনডিএমএ) উপস্থিতি রয়েছে কিনা, তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ল্যাবরেটরি থেকে পরীক্ষা করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
নরমা এইচ ব্র্যান্ড নামে রেনিটিডিন ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন করে রেনাটা লিমিটেড। ওষুধটির উৎপাদন কম হওয়ায় রেনিটিডিন নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের প্রভাব তাদের ব্যবসায় খুব একটা পড়বে না বলে দাবি করেন রেনাটার কোম্পানি সচিব মো. জোবায়ের আলম। তিনি বলেন, আমাদের রেনিটিডিনের বিক্রি খুব বেশি না। মাঝে মাঝে চিকিৎসকরা এটি প্রেসক্রাইব করেন বলে আমরা রেনিটিডিন তৈরি করি। ফলে বাজার থেকে এটি প্রত্যাহার করে নিলে আমাদের ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) এবং ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি (ইএমএ) একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করে। গবেষণায় রেনিটিডিন ওষুধে ক্যান্সারের জন্য দায়ী এনডিএমএর উপস্থিতি পাওয়া যায়। এরপর রেনিটিডিন নিয়ে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। অনেক দেশ এরই মধ্যে রেনিটিডিন উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। জেনট্যাক ব্র্যান্ড নামে রেনিটিডিন উৎপাদনকারী গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইনও এরই মধ্যে ভারতে তৈরি তাদের রেনিটিডিন ট্যাবলেট বাজার থেকে তুলে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ফাস্টফুড ও ভেজাল খাবার মানুষের মধ্যে অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়াচ্ছে। অ্যান্টিআলসারেন্ট ওষুধের বিক্রিও তাই সবচেয়ে বেশি। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ওষুধটি কিনতে পারাও এর বিক্রি বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ।
আরও পড়ুন: Stephen Hawking Biography
বন্ধুরা, এই পোস্টে আমরা আপনাকে পোস্টটি সম্পর্কে বলেছি। আশা করি আপনি এই পোস্টটি পছন্দ করবেন।
আপনার এই পোস্টটি কেমন লেগেছে, মন্তব্য করে আমাদের জানান এবং এই পোস্টে কোনও ত্রুটি থাকলেও আমরা অবশ্যই এটি সংশোধন করে আপডেট করব।
Biography, Famous Quotes ও উক্তি সমূহ লেখাটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করো। এই ধরনের লেখার নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজটি ফলো ।
ডেইলি নিউজ টাইমস বিডি ডটকম (Dailynewstimesbd.com)এর ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন করুন।
Subscribe to the Daily News Times bd.com YouTube channel and follow the Facebook page.
উক্ত আর্টিকেলের উক্তি ও বাণীসমূগ বিভিন্ন ব্লগ, উইকিপিডিয়া এবং .. রচিত গ্রন্থ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
আরও পড়তে পারেন: ভুলে গেছেন ফোনের পাসওয়ার্ড, পিন বা প্যাটার্ন? কীভাবে সেকেন্ডে করবেন আনলক, জানুন
আরও পড়ুন: কালিদাস পণ্ডিতের ধাঁধাঁ – ১। পর্ব -২ moral stories Kalidas Pondit In Bangla কালিদাস
আরো জানুন >> স্বাস্থ্যকর এই পাঁচ খাবার খেলে বাড়বে ওজন
তথ্যসূত্র: Wikipedia, Online
Sourc of : Wikipedia, Online Internet
ছবিঃ ইন্টারনেট
দৃষ্টি আকর্ষণ এই সাইটে সাধারণত আমরা নিজস্ব কোনো খবর তৈরী করি না.. আমরা বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবরগুলো সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি.. তাই কোনো খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ সবাইকে।