Tuesday, October 15, 2024
HomeBiographyনবী মুহাম্মদ কি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন?

নবী মুহাম্মদ কি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন?

ভূমিকা

ছোটবেলা মায়ের মুখে খুব অসাধারণ মানবিক একটি গল্প শুনতাম। গল্পটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ আর একজন ইহুদি বুড়িকে নিয়ে। এক ইহুদি বুড়ি রোজ মহানবীর নামাজে যাবার পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখতো, মহানবী নামাজে সিজদা করার সময় পিঠে উটের নাড়িভুঁড়ি চাপিয়ে দিতো, নানান অত্যাচার করতো, অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করতো। কিন্তু মানবদরদী মহাবিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আমাদের নবীজি সেই ইহুদি বুড়িকে কিছুই বলতেন না। মুখ বুজে সব অত্যাচার সহ্য করে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতেন, যেন সেই ইহুদি বুড়িকে আল্লাহ সঠিক পথ দেখান।

একজন মানব শিশুকে যখন জারজ নোংরা গালিটি দেয়া হয়, সন্তান কি পিতার পরিচয় জানার পরে জন্ম নেয়? Asif Mohiuddin

একদিন মহানবী দেখলেন, তার রাস্তায় কাঁটা নেই। কেউ তাকে গালি দিচ্ছে না, কেউ তার পিঠে উট কিংবা ভেড়ার নাড়িভুড়ি চাপিয়ে দিচ্ছে না। তিনি তো হতবাক! নামাজ বাদ দিয়েই দৌড়ে গেলেন বুড়ির বাসায়। গিয়ে দেখেন বুড়ি অসুস্থ। এরপরে মানবতাবাদী মহানবী বুড়ির সেবা শুশ্রূষা করলেন, প্রেম আর ভালবাসা দিয়ে তাকে সুস্থ করে তুললেন। মহানবীর এই মানবপ্রেম দেখে ইহুদি বুড়ি তার ভুল বুঝতে পারলো এবং লজ্জিত হলো। তিনি পরে ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং দ্বীনের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করলেন।

গল্পটি অসাধারণ। ছোটবেলা যখন গল্পটা শুনতাম, তখন আবেগে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে যেতো। আহা, আমাদের মহানবী কত ভালমানুষই না ছিলেন। ধর্ম বর্ণ সবাইকে সমান ভালবাসতেন। এরকম মানুষই তো পৃথিবীর জন্য দরকার। ছোটবেলা তাই মহানবীকে খুব ভালবাসতাম। আমার মা এরকম আরো নানান গল্প বলতেন মহানবীকে নিয়ে। শুনতাম আর মুগ্ধ হয়ে ভাবতাম, আমিও মহানবীর মত মানবদরদী হবো। আমাকেও কেউ গালাগালি করলে, বা কটাক্ষ করলে, এমনকি মারলেও, আমি তাকে ভালবাসা দিয়ে উত্তর দেবো। কোনদিন তাদের হত্যা করবো না। গুনগুন করে এই গানটি গাইতাম,

নবী মোর পরশ মনি, নবী মোর সোনার খনি, নবী নাম জপে যে জন, সেইতো দোজাহানের ধনী

একটু বড় হবার পরে এই গল্পটা আরো বিস্তারিতভাবে জানার জন্য কোরআন পড়তে শুরু করলাম। স্বাভাবিকভাবেই ধারণা ছিল কোরআন হাদিস এই ধরণের ঐতিহাসিক সত্য ইতিহাসে পরিপূর্ণ থাকবে। কিন্তু কোরআন হাদিসগুলো সব তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম। কোথাও এরকম কিছু খুঁজে পেলাম না। আমি খুব খুশি হতাম যদি আসলেই ঘটনাগুলো এরকম হতো। মহানবী হযরত মুহাম্মদকে আমি ছোটবেলা যেরকম জানতাম, সেভাবে পেলেই নিজের কাছে খুব ভাল লাগতো।

মহানবী নিজের বাপদাদার ধর্ম ত্যাগ করেছিলেন। তাতেই থামেন নি, উনি রীতিমত সেইসব ধর্মের সমালোচনাও করতেন। স্বাভাবিকভাবেই, কাফের পৌত্তলিকগণ এতে ক্ষিপ্ত হয়েছিল। এখনো কোন মুসলিম তার ধর্ম ত্যাগ করে হিন্দু হয়ে গেলে, বা নাস্তিক হয়ে গেলে, তার জীবন বাঁচানো মুশকিল হয়ে যায়। মহানবীর সাথেও নিশ্চয়ই এমন আচরণ হয়েছিল। মহানবী মুহাম্মদ তাদের সাথে পাল্টা আচরণ কেমন করেছিলেন? প্রেম আর ভালবাসা দিয়ে তাদের জয় করেছিলেন? নাকি তাদের খুন করিয়েছেন?

কোরআন, হাদিস, এবং অন্যান্য ইসলামি ইতিহাসে মহানবী আসলে তার সমালোচকদের, তাকে কটাক্ষকারীদের সাথে কী আচরণ করেছিলেন, তা খুঁজে দেখা তাই আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে, হাদিস গ্রন্থগুলো ঘেঁটে একেবারেই ভিন্ন এক মুহাম্মদকে আবিষ্কার করলাম! সেই ভিন্ন এক মুহাম্মদের কথাই এখানে উল্লেখ করছি। লেখাটি অনেক বড় হবে। আশাকরি পাঠক মন দিয়ে পুরোটুকু পড়বেন।

বন্ধু নির্বাচনে আমি ভীষণ রকম সচেতন থাকি সবসময়। একজন মানুষের সাথে বন্ধুত্ব মানে তার সাথে কথা বলা, বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানো, সুখ দুঃখের বিষয়গুলো শেয়ার করা। তাই খুব সচেতনভাবে এমন বন্ধু আমি নির্বাচন করি না, যাদের সাথে আমার মন মানসিকতার মিল নেই। যখন আমি কোন মানুষের সাথে পরিচিত হই, তিনি কেমন মানুষ তা বিবেচনা করার জন্য আমি প্রথমেই তিনটি বিষয় বিবেচনায় রাখি-

  • উনি ধর্মীয়ভাবে সাম্প্রদায়িক কিনা। ভিন্ন ধর্মের মানুষদের ঘৃণা করেন কিনা।
  • নারী, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের প্রতি উনার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন। উনি নারীদের পুরুষদের চাইতে নিচু স্তরের মানুষ মনে করেন কিনা।
  • দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, আদিবাসী, অবাঙালিদের প্রতি উনার দৃষ্টিভঙ্গি কেমন।

এই তিনটি বিষয় বিবেচনার পরে আমি সাধারণত তার সম্পর্কে সিদ্ধান্তে আসি যে, উনি ভাল মানুষ অথবা খারাপ মানুষ। এরকম মানুষের সাথে মেশা, বন্ধুত্ব করা বা এরকম মানুষের সাথে আমার আলাপ করা ঠিক হবে কিনা, তা বেশিরভাগ সময়ই এই তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। তবে এখানেই বিষয়টি শেষ হয়ে যায় না। এরপরেও আমি দেখি, উনি দুর্নীতিবাজ কিনা, উনি দুর্বলের ওপরে অত্যাচার করেন কিনা, বিশেষ করে বাসার কাজের ছেলেমেয়েদের সাথে উনার আচরণ কেমন। এগুলোর একটাও যদি আমি নেগেটিভ দেখি, সেই মানুষের সাথে আমার আর বন্ধুত্ব টেকে না। আমি ধীরে ধীরে তাকে এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করি। তার সাথে সম্পর্ক আর রাখতে ইচ্ছুক থাকি না। তবে শুধু যে এই কয়েকটি বিষয়ই বিবেচনা করি, তাই নয়। বিবেচনা করি আরও অনেকগুলো বিষয়।

নারীর যৌনতা: কাম বাসনা কি শুধু পুরুষের বিষয়, নারীকে কেন নিরুৎসাহিত করা হয়?

এই যে মানুষকে বিচার বিশ্লেষণ, এটা অত্যন্ত জরুরি বলেই আমার মনে হয়। এমনকি, আমার ভাই বোন আত্মীয়স্বজনদের মধ্যেও যদি এরকম স্বভাবের কাউকে আমি খুঁজে পাই, তার বা তাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে, বা আড্ডা দিতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না। বন্ধু বা কাছের মানুষ কিংবা প্রয়োজন হিসেবে বিবেচনা করতে এই বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্য রাখতেই হয়। নতুবা আমি নিজের কাছেই নিজে ছোট হয়ে যাবো। কিন্তু পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে কাউকে বিবেচনা করতে হলে নিশ্চয়ই আরো অনেকগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আরো অনেক বিশ্লেষণের দরকার হবে। কারণ এর সাথে জড়িত আছে সাধারণ মানুষের অনুসরণ করার প্রবণতা। ভুল মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে স্থান দেয়া হলে সাধারণ মানুষ না বুঝেই তাকে অনুসরণ করতে চাইবে। যার কারণে তারাও সেই মানুষের বৈশিষ্ট্যগুলো ধারণ করবে।

নবী মুহাম্মদ নাকি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন। একজন ভাল মানুষের মধ্যে আমরা কী কী গুণাবলী প্রত্যাশা করি? তিনি কাউকে খুন করবেন না, কাউকে ধর্ষণ করবেন না, কারোর সম্পদ লুট করবেন না, কাউকে জোরজবরদস্তি করে কোন কাজে বাধ্য করবে না, সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনা পোষণ করবে না, নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবেন এবং তাদের সমতা বিষয়ে সচেতন থাকবেন, সংখ্যালঘু বা অন্য ধর্মের মানুষকে সমমর্যাদার মানুষ হিসেবে গণ্য করবেন, এইসব। এইসব গুণাবলীর কথা বিচার বিবেচনা করলে, নবী মুহাম্মদকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ তো দুরের কথা, নিদেন পক্ষে একজন ভাল মানুষও কি বলা সম্ভব?

নার্সিসিস্ট বা আত্মপ্রেমী ছিলেন নবী

বিউটি ব্লগারকে যৌন নির্যাতন : আরজে নীরার জামিন নামঞ্জুর

নবী নিজেকে ভালবাসতে নির্দেশ দিয়ে গেছেন

ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদ তার উম্মতদের নির্দেশ দিয়ে গেছেন, তাকে ভালবাসতে। একজন প্রকৃত মুমিনের কাছে তার পিতামাতার চাইতেও নবী বেশি প্রিয় হতেই হবে। নইলে সে মুমিনই নয়। নবীকে ভালবাসতে হবে, এই কথাটি যদি নবী নিজে ছাড়া অন্য কেউ বলতো, তাহলে আপত্তি ছিল না। কিন্তু খোদ নবী নিজেই তাকে ভালবাসতে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন, বিষয়টি অত্যন্ত হাস্যকর। ঠিক যেমন সিনেমার জেনারেল আলাদিন, কিংবা কোন সামরিক শাসক তার অনুসারীদের তাকে ভালবাসতে ও শ্রদ্ধা করতে বাধ্য করতো। গলায় চাপাতি ধরে ভালবাসা আদায় রীতিমত। একটা বাঙলা সিনেমা ছিল, ভালবাসা দিবি কিনা বল! [1]

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন >> 

 

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

নবী মুহাম্মদ কি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন?



Hero

Welcome to the future of building with WordPress. The elegant description could be the support for your call to action or just an attention-catching anchor. Whatever your plan is, our theme makes it simple to combine, rearrange and customize elements as you desire.

Translate »